একুশে ফেব্রুয়ারি বা ৮ই ফাল্গুন আমাদের মাতৃভাষা দিবস। আমাদের এই মাতৃভাষায় যেন আমরা কথা বলতে পারি এজন্য যারা আত্মত্যাগ করেছেন, জীবন দিয়েছেন ও রক্ত দিয়েছেন আমাদের উচিত তাঁদের প্রতি ভালোবাসা রাখা এবং তাদের জন্য দোয়া করা।
মাতৃভাষায় কথা বলতে পারা আল্লাহ তায়ালার দয়া ও অনুগ্রহ।নিজের মাতৃভাষায় কথা বলার মতো আত্মতৃপ্তি অন্য কোনো ভাষায় পাওয়া যায় না। পৃথিবীর প্রত্যেকটা ভাষা মহান আল্লাহ তায়ালার দান। পৃথিবীর সকল ভাষা আল্লাহ তায়লার সৃষ্টি। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আর তাঁহার নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। এতে জ্ঞানীদের জন্যে অবশ্যই বহু নিদর্শন রয়েছে। ( সূরা রুম :২২)
মানুষ যেভাবে কথা বলে একটি পশু সেভাবে কথা বলতে পারেনা। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের কথা বলার তাওফিক দান করেছেন। সূরা আর রাহমানের ৪ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, দয়াময় আল্লাহর একটি অপরিসীম দয়া হচ্ছে তিনি মানুষকে কথা বলার তাওফিক দিয়েছেন।আমরা যে, কথা বলতে পারছি এজন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা উচিত। যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা মাতৃভাষা পেয়েছি তাদের জন্য দোয়া করা এবং মাতৃভাষার যেন অপব্যবহার না হয় সেদিকে খেয়াল করা উচিত।
মুখের ভাষা দিয়ে যেমন মানুষের মন জয় করা যায় তেমনি আবার একি ভাষা দিয়ে মানুষের অন্তরকে ক্ষতবিক্ষত করা যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কখনো কখনো মুখের ভাষা তলোয়ারের আঘাতের চেয়ে মারাত্মক হয়।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা হাসিমুখে এবং সুন্দর ভাষায় কথা বলতেন। হাসিমুখে এবং সুন্দর বাসায় কথা বলা সুন্নাহ। আমাদেরকেও একে অপরের সাথে কথা বলার সময় হাসিমুখে, সুন্দর ও মৃদু ভাষায় কথা বলা উচিত। মুখ দিয়ে মানুষকে গালাগালি করা, তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা, গীবত করা, মিথ্যা তোহমত দেয়া দুনিয়া ও আখেরাতে অকল্যাণের কারণ হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ জাহান্নামে যাবে দুটি অঙ্গের কারণে , তার মাঝে একটি হচ্ছে মুখ অপরটি হচ্ছে দুই অঙ্গের মাঝখানের লজ্জাস্থান।
আমাদের উচিত ভাষার সদ্ব্যবহার করা। ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন যাদের রক্তের বিনিময়ে ভাষা পেয়েছি তাদের জন্য আমরা আন্তরিক ভালোবাসা রাখব ও দোয়া করব।
লেখক: বিশিষ্ট ইসলামীক স্কলার